মনপুরা'র ১০০ দিন পূর্ণ

প্রত্যাশা আরও ২০০ দিনের
পর্বতসম দ্বিধা-দ্বন্দ্ব মাথায় নিয়ে গেল ১৩ই ফেব্রুয়ারি মুক্তি পায় প্রশংসিত নাট্যকার-পরিচালক গিয়াসউদ্দিন সেলিমের প্রথম চলচ্চিত্র 'মনপুরা'। ছোট পর্দার কুশীলব নিয়ে তৈরি বলে এ ছবিটি নিয়ে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের অনেকেই ভেবেছিলেন দর্শক টানতে পারবে না ছবিটি। কিন্তু সে ভাবনা মুখ থুবড়ে পড়েছে মুক্তির প্রথম সপ্তাহেই। সেলিমের নির্মাণ শৈলী, বাংলার প্রেমের গল্প আর মুক্তির পর জোরালো সাংগঠনিক তৎপরতার মধ্য দিয়ে 'মনপুরা' অতিক্রম করেছে শেষ ২৫ বছরের চলচ্চিত্র সফলতার ইতিহাস। 'মনপুরা' মুক্তির প্রথম থেকে দেশজুড়ে ধারাবাহিক সফলতার ১০০ দিন পার হয়েছে গতকাল। এ নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই এর জনক যারপরনাই খুশি থাকার কথা। গুনে গুনে সফলতার ১০০টি দিন পূর্ণ করে কেমন অনুভূতি আপনার? সেলিম বলেন, খুশি থাকারই তো কথা। বেজার থাকার তো কারণ নেই। তবে এটা ঠিক মাথায় অনেক চাপ, দিনকে দিন দেশের তৃণমূল পর্যায়ের হল মালিকরা 'মনপুরা'র জন্য প্রতিদিন আসছে। তাদের সঙ্গে আলাপ করতে হচ্ছে, বেচা-বিক্রি করতে হচ্ছে, পাইরেসি ঠেকানোর সর্বাত্মক চেষ্টা এখনও অব্যাহত রেখেছি, আবার চলচ্চিত্র নামক নতুন এই জগৎটাকে একটু একটু করে চিনছি, শিখছি অনেক কিছু। কারণ নাটক মিডিয়াটা ছিল আমার বউ-বাচ্চা'র মতো ছোট্ট একটি চেনা জায়গা। আর চলচ্চিত্রটা হচ্ছে সমগ্র বাংলাদেশ। মানে 'মনপুরা' দিয়ে একটা বাংলাদেশ চষে বেড়াচ্ছি। এটা অনেক কঠিন কাজ, যা বলে বোঝাবার নয়। আর ১০০ দিন পূর্ণ করা করার অনুভূতি বলতে এটুকু বলবো, ছবিটা যখন আমি বানানোর জন্য হাত দেই তখন থেকেই আমার পরিকল্পনা এবং স্বপ্ন ছিল সারা দেশের হল বিমুখ মানুষগুলো আবার একসঙ্গে হলে ফিরবে। এমন স্বপ্ন হয়তো সবাই দেখে, বিশেষ করে যারা নতুন ছবি তৈরি করেছে এবং করছে। আমি আমার সেই স্বপ্নটাকে হাতের মুঠোয় পুরতে পেরেছি গত ১০০টা দিনে। আমার বিশ্বাস এই বাংলায় 'মনপুরা' আর ২০০ দিন দাবড়িয়ে বেড়াবে দেশের আরও ৫০০টি সিনেমা হলে। মাত্রতো ২০০টি হল শেষ হলো। এটা স্বপ্ন নয়, আমি স্পষ্ট দেখতে পারছি। এদিকে 'মনপুরা' নিয়ে আরও ২০০ দিনের পরিকল্পনার পাশাপাশি এরই মধ্যে নতুন ছবির কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন গিয়াস উদ্দিন সেলিম। প্রথম ছবির আকাশচুম্বী অনাকাঙ্খিত সফলতার পর নতুন ছবি নিয়ে সেলিমের পরিকল্পনা অনেকটাই অকল্পনীয় আকারে রূপ নিচ্ছে। লোকমুখে শোনা ছবিটির সম্ভাব্য নাম 'কাজল রেখা'। প্রসঙ্গক্রমে সেলিম জানান, ছবির গল্প এরই মধ্যে তৈরি করে ফেলেছি। তবে এর নাম এবং চরিত্রাভিনয় শিল্পীদের চূড়ান্ত করার আগে মুখ খুলতে একদমই অপারগতা প্রকাশ করেছেন তিনি। মনপুরা'র পর এই নির্মাতা কাকে নিয়ে কি ধরনের চলচ্চিত্র নির্মাণ করবেন - এ নিয়ে মিডিয়া এবং দর্শকদের ব্যাপক আগ্রহে খানিক প্রশান্তি যোগাতে কিছু সম্ভাব্য তথ্য প্রকাশ করেছেন মানবজমিনের কাছে। তিনি বলেন, নতুন ছবিটির মধ্য দিয়ে আমরা এক লহমায় ফিরে যেতে চাই এক হাজার বছর পেছনে। এর জন্য স্ক্রিপ্টিং এর সঙ্গে ব্যাপক গবেষণা এবং সিটিং-মিটিং চলছে এর লোকেশন, সেট ডিজাইন, অঙ্গসজ্জা আর চিত্রায়নের ধরন নিয়ে। আমরা এ ছবির নায়ক-নায়িকা হিসেবে নতুন দু'টি মুখ খুঁজছি। এবার নায়িকা চরিত্রে প্রভাকে রাখার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে প্রভা'র বিষয়ে পুরো গ্যারান্টি না দিতে পারলেও সেলিম জানান, এবারের ছবিতে বিশেষ একটি চরিত্র নিয়ে আসছেন হুমায়ূন ফরিদী। এর সঙ্গে এবারও থাকবে চঞ্চল-মিলি'র উপস্থিতি। তবে ছবিতে এ জুটির অবস্থান থাকবে অনেকটাই অতিথি হিসেবে। প্রথম ছবির সফলতায় অগাধ মানসিক শক্তি অর্জনকারী এই নির্মাতা তার দ্বিতীয় ছবি নিয়ে অনেকটাই অকল্পনীয় আয়োজনে নামতে যাচ্ছেন। যার শুটিং শুরু করবেন আগামী বছরের প্রথম থেকে।

No comments:

Post a Comment